আহাম্মকের গদ্য(উনিশ)

 

 আহাম্মকের গদ্য(উনিশ)


নন্দলালের মন্দ কপাল


এই বিশ্বে বিগত সত্যের সাথে হাস্যের সুনিপুন প্রত্যক্ষ যোগ আমাদের বারংবার পরিপক্ব থেকে তজুর্বাধারী হয়ে যেতে সাহায্য করে। ভরত তাঁর নাট্যশাস্ত্রে বলেন : "এতেন সর্বে রসা হাস্যে অন্তর্ভূতা ইতি দর্শিতম্" : এর মাধ্যমেই দেখানো হ'ল সমস্ত রসই হাস্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। মানুষ একটি তাত্ত্বিক স্বত্ত্বাকে সামনে রেখে বিশ্বাস করে যে প্রাতিস্বকীয়তা বা individualism তাকে অন্যের চেয়ে আলাদা করে তুলবে। এই শ্লাঘাই আসলে সৃষ্টির নিয়মের যথার্থ কৌতুকজনক।" পেরিয়ে আসা সত্য এবং যাপনের নানান উত্থান-পতনই পরবর্তীতে আমাদের কাছে এক নিরাময় উদ্ভূত হাস্য প্রসঙ্গ। বের্গসঁ বলেন "Laughter is Corrective।" 

     রাওলে-র কথা ইদানিং খুব মনে পড়ে। ষোড়শ শতাব্দীর গোড়ার দিকে ফ্রান্সে এক বিশেষ দর্শন জীবন সম্পর্কে, জগৎ সম্বন্ধে এক নির্মোহ নিরাসক্তি মিশিয়ে হাসির আলোয় অদৃষ্টকে পরিহাস করার কৌশল বিলানো শুরু হয়। 'পাঁতা গ্রুয়েলিজম'। 

       আমরা সবাই কমবেশি এই পর্যায়ের ভেতর দিয়ে যাই। তবে আমার মত আহাম্মকের এই সব বলার বা স্পর্শের অধিকার আছে কি না জানা নেই। এত গুরুগম্ভীর আলোচনারও বিশেষ প্রয়োজন আছে কিনা বুঝি না তবে হালকা করে 'সবজান্তা বিড়ি-বাঁধতা' ভাবটা না তুলতে পারলে কি আর সত্যের আসল ভূমিকাটা হয়? যাক সে কথা, সময়কালটা এখানে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ নয়, যা মূখ্য তা হল বিগত সত্য যা রং পাল্টে হয়ে ওঠে নিরাময় যাপন-

   ঝাড়খণ্ডী আন্দোলনের বাতাস  আনাচে কানাচে ফিসফাস করে, এই সময় জঙ্গলমহলের ধুলো লাল। একটা দীর্ঘ নৈরাশ্য ঘরে-বাইরে চাপ বেঁধে থাকে প্রত্যেকের নিঃশ্বাসে। মানুষ হাসতে ভুলে যাচ্ছে। সত্ত্বার লড়াই সস্তার লড়াই আর ভবিষ্যৎ সব এক বাহনে উঠে ঘাপটি মেরে আছে, কে যে কার শিকার গুলিয়ে যায়। শিক্ষা ক্ষীণকায়া হয়ে পাশের রাজ্যগুলোতে খাবি খাচ্ছে। ৭০টাকার দৈনিক মজুরিতে মানুষ মাইনগুলোতে ভিড় জমিয়েছে নির্দিধায়। কয়েকটা বর্ষা পেরিয়ে গ্যাছে চাষের নাম-নিশান মুছে দিতে দিতে। কারখানাগুলোতে ঠিকা শ্রমিকরা রাতের পর রাত কলুর বলদের মত বেড় দিয়েই চলে। সারা গ্রাম ঘুরলে ৪-৫টির বেশি ছেলে মেট্রিকের হার্ডল ডিঙোয় না, এই সময়টা কিন্তু তাদের পিঠ চাপড়ে দ্যায়নি একটিবারও। কিন্তু ওই মানুষ ভুলে যায় বড্ড তাড়াতাড়ি। যেটুকু স্মৃতি ধ্রুবক হয়ে থাকে তারাই হাস্যরসের যোগান দাতা। সেই সময়টাও একসময় নিজেকে নিয়ে খিল্লি করে। আর সেই খিল্লিই হয়ে ওঠে আহাম্মকের গদ্যের রসদ...

       সাড়ে দশটা তখনও বাজেনি বোধহয়। হলের প্রায় প্রতিটা সীটের ছাত্রই উপস্থিত।বাংলা পরীক্ষা, মাতৃভাষা তো তাই কিছু না জানলেও ঘেপেঘুপে তেরছা চোখে, টপকা-টপকি করে বানিয়ে টানিয়ে মনের আবেগে অন্তত দু-পাঁচ কলম লেখা যায়।কিন্তু আজ সকাল থেকেই সুতো কাটছে। ইংরাজী। নামটার মতোই একটা কিলিমাঞ্জারো টাইপ দাঁত খিঁচোনো ভাব। এই বিষয়টাই বড় দাঁতগিজড়া, কখন যে কী হয়, কে জানে! এই যেমন cut–কাট,  but–বাট, কিন্তু  put- পুট; এর in, at, of, on এগুলোর বসার তো আগা-বোঁকা খুঁজে পাই না গোঁসাই। তারওপর আমাদের দুটো ক্লাস এইটের মাঝে একটি করে বাঁশ, মানে ক্লাস ফাইভ। তবে বসার জায়গাটা দেখে মনে মকর-বাঁদনা  মকর-বাঁদনা হচ্ছিল।বলা যায় বেশ একটা আত্মতুষ্টি ভাব। সামনের সিটে সাক্ষাৎ বিপদতারণ গরাম ঠাকুরের মতন বসে আছে ডমনা। মানে ডমনচন্দ্র। প্রতি ক্লাসে বছর বছর তাঁর উন্নতির কিস্সা শুনতে শুনতে মনটা বিনপুরের ভাঙা হাট হয়ে যায়। তবে আজ মনটা ঝুম্যৈর হাঁকানা বেজেন খুড়ার মতন অনুভব করছিলাম--

     "কাঁশিফুল বাতাসে উড়াব

আর তিরিংরিঙ্যা বাঁসরি বাজাব"


      হুঁ হুঁ বাওয়া, এক রোল সব সময় ওর পকেটে।তারই পাশে গবরা। আমরা ওকে ওই নামেই ডাকি। গোবর্ধনের শর্ট ফর্ম। ও তো আবার কথার মাঝে মাঝে ফরফররর করে বেশ কিছু বাক্য ইংরেজীতে বলে যায়। অবশ্য ভুল ঠিক বোঝার ক্ষ্যামতা আমার মত আহাম্মকের নেই বলেই বোধহয় অমন টেনে টেনে বলার সাহস পায়। ভুল বলুক আর ঠিক বলুক অত গুবগুবিতে কি আর যায় আসে ভাই, আমি হলাম গিয়ে ওই নেহাৎই আদার ব্যাপারী। তাছাড়া এমনিতেই আমার গবরাকে দেখলে ক্যামোন বিছুতি আলকুশি টাইপ মনে হয়। কিন্তু আজ মনে হলে চলবে না, প্রয়োজনে হালকা করে চুলকে নিতেও রাজি তাই বাধ্য হয়েই আগ বাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলাম- কী রে, আজ পরীক্ষার প্রস্তুতি কেমন?

   ছাতিটা ফাঁপিয়ে বলল,- ইংরেজি তো ভালো হবেই।গতকালই রচনাটা ঠিকঠাক নামানো গ্যালো না!

মনে মনে বললাম , ভালো হোক, ভালো হোক... কারন তোদের দুজনের উপরই আমার পাশ, না চাষ তা নির্ভর করছে। বাবা তো বলেই দিয়েছে,- "এই বতরে ইংরেজী জ্যুতের নাঞ জাঁইনলে উ পান দকানঅ চালাতে নাঞ পাইরবেক। তাই তর কপালঅ ইবার ইংরেজির নম্বরের উপরেই ডেড়ঠেইঞা হঞে ডাঁঢ়হাঁঞ আছে। নাঞইহলে বিল-বাদাড়ে হাল  ঠেলবিস।"

   লাঙল বললেই বুকটা ঢিস করে পাংচার হয়ে যায়, যেন সাইকেলের পাম্প খুলল। লাঙল জিনিসটা দেখতে নেহাৎ মন্দ নয়, তবে ওই!- লম্বায় চওড়ায় বেশ বড়, ভুকলা।-মধুখুড়াকে ওটা কাঁধে করে বয়ে নিয়ে যেতে দেখেছি।আমাকেও তো বোধহয় কাঁধে করেই নিয়ে যেতে হবে! বোধহয় নয়, অবধারিত। আমাকে তো আর চাষ করতে যাবার জন্য লাঙল বওয়ার লোক দেবে না! সঙ্গে সঙ্গে টুলটুলে বেলুনগুলোর মতো নিঃশ্বাসটা যেন আটকে গেল।একে এই তো চেহারা! মানব শরীরে হাড়ের সংখ্যাবস্থান দেখাতে গেলে জামা প্যান্টুলুন খুলে  দাঁড় করিয়ে দিলেই হয়। তার উপর বাপ, ওই লাঙল রূপ বৃহৎ পাপের বোঝা! বুকের ভেতরের কান্নাটা হঠাৎ কবাডি কবাডি কবাডি... করে বেরোতে চেষ্টা করছিল, অনেক কষ্টে ‍আটকালাম। 

    কাল বাংলা পরীক্ষার শেষে পানুর দোকানে দাঁড়িয়ে পান মোড়া দেখছিলাম একমনে। ইংরেজিটা আমি 'কাজ চালাও' টাইপ তবুও জানি তো! ঐ – দিস, দ্যাট, ক্যাট ব্যাট স্যাট এই রকম আর কি! তাই মনে মনে লাঙল অপেক্ষা পান দোকানটা নেহাৎ মন্দ নয় বলেই ভেবে ফেললাম। তাছাড়া নিজের দোকান হলে তো কথাই নেই।পানুর জারগুলো সব খাসা খাসা লজেন্সে ভর্তি। ওরকম ভাবে সাজিয়ে নিতে পারলেই হল যখন খুশি এক আধটা জার খুলে মুখে চালান দিলে জীবনটা বহির ডাঁইড়্যা হয়ে চিলচিলাবে। কিন্তু দু-একটা পান মোড়ার প্যাঁচ দেখেই বুঝলাম কাজটা তত সহজ হবে না। তার উপর পানের নাম আর জর্দা/মশলার নাম মনে রাখার চেয়ে, ফেরেল না কি বলে, তার সুত্র মুখস্থ রাখা ঢের সোজা।

   যথাসময়ে মায়াধরদা ঘন্টা দিল। সঙ্গে সঙ্গে দাঁতাল বীরেন প্রশ্নপত্র নিয়ে ছুটতে ছুটতে ঢুকল।বীরেনদার ওই নামটা স্কুলে পূর্বসুরীদের অনুসরণ করে ঠিক কবে থেকে যে চলে আসছে তা বলতে পারব না। তবে তার দাঁতগুলো মাইরি সত্যি মার্কামারা। প্রশান্ত স্যারের সাথে বেচারী কোয়েশ্চেন পেপার বিলোচ্ছিল, হঠাৎ পেছন থেকে কে যেন‍ একবার বলে উঠল , অ্যায় দাঁতাল!

   দেখলাম সাটার নামিয়ে দাঁত ঢাকার চেষ্টা করছে।সে একটি মারাত্মক দৃশ্য, কাকা। দাঁতাল বীরেন তার মুখ বন্ধ করে শাবল প্রমান দাঁত ঢাকছে।দাঁতগুলোর দু-একটা মাঝে মধ্যে পোকায় খাওয়া। কালো। ঠিক যেন হারমোনিয়ামের রীড। বীরেনের দাঁত দেখেও আমার হাসি পাচ্ছিল না। বুকের ভেতর হৃদস্পন্দন তখন হাওড়া-শিয়ালদা... হাওড়া-শিয়ালদা... করছে।

  প্রশ্নপত্র পেয়েই ঢিপ করে মাথায় ঠেকালাম।কিন্তু কিছুক্ষণ পরই বুঝলাম ফক্কা কপাল আমার, এ সমস্ত ফিরিঙ্গি ফরমান আমার সাধ্যের বাইরে। প্রশ্ন পড়তেই হিমসিম খাচ্ছি, উত্তর লিখব কী? নেহাতই সাদা খাতা জমা দিতে হবে!নিজের থেকেই লজ্জা পেলাম। তাই চেষ্টা চালাচ্ছিলাম মৃন্ময়ের কাছ থেকে কিছু হাতিয়ে লেখা যায় কিনা। কিন্তু কপাল মন্দা, যতবারই ওকে ডাকি ততবারি বলে, উঃ! বিরক্ত করছিস কেন? এবার কিন্তু স্যারকে বলে দেব। ঠিক সুবিধা করা যাবে না ততক্ষণে তা বুঝে গেছি। এবার ঘাড়টা রিভলভিং চেয়ারের মতো ঘুরিয়ে পিছনে ফিরলাম, হৃষির দিকে। সে ইংলিশ ম্যান তো আরও এক কাঁটা ওপরে,--"স্যার , আমার খাতা দেখছে!"

   


       ফলটা মিনিট খানেকের মধ্যেই বুঝতে পারলাম – কর্ণপীড়ন ও স্থানান্তর।কানটা দিয়ে আমাকে এমন ভাবে ঝোলাল মাইরি যে জমি থেকে খোঁয়াড়ে নিয়ে আসা ছাগলটার কথা মনে পড়ে গেল। বেচারার কানটা ধরতে কি ম্যা ম্যা টাই না করছিল – আহারে আজ অবলা জীবটার জন্য আমার বড্ড মায়া হচ্ছিল।‍ খেতে ছাগল ঢুকবে না তো কো মনোহরদার গোয়ালে ঢুকবে!! এরপর ঢুকলে আর কখনও কোনওদিন ছাগলের কান ধরে খোঁয়াড়ে আন‍ব‍‍ না।‍‍‍‍‍‍‍ 

ফাস্ট বেঞ্চের নগেনকে সরিয়ে ফুটো ঘটের মতো দিল বসিয়ে। তা বসলাম। অহিংস আন্দোলন করে তো আর স্বাধীনতা আনা যাবে না! কিছুক্ষন দাঁত দিয়ে নখ কাটলাম, খানিক মগজহীন মাথাটা চুলকে নিলাম..। এভাবেই সময়টা ঘড়ির কাঁটার উপর চড়ে এগিয়ে যাচ্ছিল। আমি ওখানে বসে ততক্ষণ বুঝে গেছি এবার মান বাঁচানোর প্রশ্ন উটবে।মরণ পণ করে নম্বর সঞ্চয়ে নেমে পড়লাম। এদিক সেদিক এপাশ ওপাশ শেষে ট্রু-ফলস, ম্যাচিং, টিক চিহ্ণ ইত্যাদি ইত্যাদি করে সিওর শট বত্রিশ মতো ম্যানেজ হয়েছে। এর মাঝে পাঁচমিশেলি পাণ্ডিত্যে ভর করে প্যারাগ্রাফটাও নামিয়ে ফেলেছি। কিন্তু কি যে লিখেছি সেই প্রশ্ন যে করবে তার মগজের পোষ্টমর্টাম করানো উচিৎ তাছাড়া এই বিষয়ে আমার আত্মবিশ্বাস দু দুগুণে পাঁচ। বুঝলাম বাকি আর মাত্র দু নম্বর তাহলেই মোটামুটি লাঙলটা ঠেকানো যাবে। কিন্তু বাদ সাধল ওই দু’টো নম্বর।বাথরুম লাইফ লাইনটাও শেষ। ম্যানেজ নামক অপশনটাও আর তেমন কাজ করছে না। তার উপর ফাস্ট বেঞ্চ, মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা, কাকা। বেশি ধানাই পানাই করলেই খাতা ক্যানসেল। আমিও চাটান পাথরের ব্যাটা। তাতে কি! মনে মনে ঠিক করলাম, দু নম্বর তো? ও হাম দেখ লেগা। আধঘন্টার  বেশি সময় তখনও, তাই বাধ্য হয়ে ভাবলাম -আর কাউকে খোসামুদি নয়, নিজে নিজে করব।

    প্রশ্নপত্রটা মন দিয়ে পড়ার চেষ্টা করছিলাম আর বাসি মুড়ির মতো মিইয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ যেন আমার মগজের পুনরঙ্কুরোদ্গম হল। দেখলাম পাঁচের দাগের-র প্রশ্নতে লেখা আছে – “correct the sentence.” তার প্রথম বাক্যটা রয়েছে – the earth moved round the sun. সঙ্গে সঙ্গে রজত স্যারের ক্লাসের কথাগুলো মনে পড়ে গেল। বাক্যের প্রথম শব্দের প্রথম অক্ষরটি সর্বদা বড়ো হাতের হবে। ভাগ্যিস সেদিন ক্লাসটা মন দিয়ে শুনেছিলাম।মন দিয়ে ক্লাসের এই একটি সুবিধা।নিজের প্রতি বেশ অহঙ্কারই হচ্ছিল।পরের বার থেকে আর ফাঁকি নয়, মন দিয়ে ক্লাসগুলো করতে হবে।যদিও এই পণটা নতুন নয়। বিগত সব বছরই পরীক্ষার সময় মনে মনে এটা করে থাকি। অন্য সময় হলে হয়তো দমে যেতাম , কিন্তু আজ মনটা বেশ হালকা লাগছে।নিজের প্রচেষ্টায় লাঙলটা এড়ানো যাবে।তাই খাতার উপর কলমখানা বাগিয়ে লিখেই ফেললাম, “The earth moved round the sun.” 

     মনটার মধ্যে বেশ খুশির হাওয়া বইছিল।অনেকটা সময় কেটে গেছে।তবে তখনও আরও মিনিট পনেরো মতন বাকি। কিন্তু কিছুতেই আর মন বসছিল না।মনে হচ্ছিল খাতা জমা দিয়ে রুবেন আজ ফিরফিরি আর পেঁপতি বানিয়ে দেখাবে বলছিল। এই পেঁপতির একটা মাহাত্ম্য আছে সবাই মিলে সন্ধ্যার দিকে বিমলা জেঠির জানালা ধারে বাজালে প্রথমে উল্লাট বাখান আর তার খানিক পরে তাতে কাজ না হলে চারআনা বাঁধা, কারণ সেই সময় জেঠি সেরেঞ শোনে। আমাদের পেঁপতির চেরচেরানি সেই সেরেঞের ঘাট শ্রাদ্ধ পার করে চেরেং পোকার নগরকীর্তনে এসে দাঁড়াতো।

     হঠাৎ পন্ডিতমশাই একটা হিজিবিজি কাটাকুটিওয়ালা কাগজ-পত্তর নিয়ে ক্লাসে ঢুকলেন। এই লোকটিকে আমার বড্ড ভয় হয়। কারণ উনি কখনও ভালো খবর বয়ে আনেন না। শোনা কথা  জন্মের পরেই নাকি তাঁর দাদুর কানের পর্দা নষ্ট হয়ে এক্কেবারে নিরেট কালা হয়ে গেছল। কোবরেজ বদ্যি করে শেষে কানে গুপিযন্তর লাগিয়ে তবে রক্ষে হয়েছিল। নইলে ওই বয়সেও তাঁর দাদুর ডিভোর্সটা পাকা হয়ে যেত। যথারীতি ট্র্যাডিশন বজায় রেখে উনি আমার ইয়ে মেরে দিয়ে গেলেন। মানে আশাটা আর কি!

      --"অ্যায় ক্লাস এইট, পাঁচের দাগের এ-র প্রথমের বাক্যটার প্রথম শব্দের ছোট হাতের 'টি' কেটে বড়ো হাতের করে নাও।"

    মনে মনে রবিঠাকুরের কবিতাটা আওড়ালাম--

 "আমরা চাষ করি আনন্দে 

মাঠে মাঠে বেলা কাটে সকাল হতে সন্ধ্যে--।"

             এটা আবার রবিঠাকুরের লেখা তো, কে জানে!


আগের পর্বটি পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন-


Post a Comment

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.