আহাম্মকের গদ্য(চৌদ্দ)
হারিকিরি তার মগজ হারিয়েছে কদিন।নিদানের প্রস্তাব জানা নেই। তবে দিদা ঠাকুমাদের দেখতাম পুরোনো কাসুন্দির স্বাদ বরকরার রাখার নিরন্তর প্রয়াস।রোদ খাওয়াতো।নাড়াচাড়া করে নিত অবশেষে বয়াম পাল্টে নেওয়া।কিন্তু কাসুন্দি একই রয়ে যেত বছরের পর বছর। অনেকটা পুটু ময়রার চপ ভাজা তেলটার মত।পার্থক্য শুধু এটুকুই সে তার আধারটাও পাল্টাতো না।কড়াই তার শালগ্রাম শিলা।নতুন কেনার পর আর জল সাবান বা পরিমার্জনেরর মুখ দ্যাখেনি।কিন্তু প্রতিদিন উনুনে আগুন দেবার আগে নম করে নেবে।তা নিক তাতে আমার মামার ভগ্নিপতির কি যায় বা আসে!! কিন্ত যা যায় বা আসে তা ওই কাসুন্দি এক রেখে বয়াম পাল্টানোতে।রোদ আলো বাতাস খাক তাতে কিছুটা শোধিত বা সংশোধিত হবার একটা অবকাশ জন্মায়।কিন্তু ওই বয়াম পাল্টে ফ্যালার পেছনে এক আত্মবিস্মৃতির অদ্ভুত মনস্তত্ব থেকে যায়।সেটা ও পুরোনো কাসুন্দিির মতোই উপাদেয় বস্তু।অথচ তারা বলত পুরোনো কাসুন্দি পথ্যের মতন।মানে প্রচলিত। হাথীকে দো দাঁত হোতে হ্যায়, এক খানে কে ওউর এক দিখানেকে।বোঝ।
হিন্দির কথায় মনে পড়ল, আমার ছেলে মহিষ কে কাড়া বলে শুকরকে ঘুসুর বলে মুরগিকে খুকড়া বলে... ইত্যাদি ইত্যাদি...প্রথম দু চারবার বেশ অপ্রস্তুতে পড়েছি মান্য বাঙালি পড়শিদের কাছে।পরে পরে সন্তানের হাত ধরে বৌদ্ধিক বিকাশ ও যুক্তির ডানায় ভর দিয়ে আমি ওকে বলিঞছি হঁ বেটা উটা খুকড়াই বঠে।মান্যকে আমরাই মান্য করে তুলি আর পরে হারিকিরি করি।অঙ্কুরে নয়।পুটু ময়রার কড়াই সত্যিই শালগ্রাম।পাড়ার প্রায় সিংহ ভাগ মানুষ খায় এমন কি অশীতিপর বৃদ্ধও।বা কানুর মায়ের প্রধান প্রতিপক্ষ দিনুদাও।যে কি না ক্রনিক আমাশার রুগি,কই তার তো কিছু হয় না।তাই আমি তার দর্শন মানিয়া লইলাম অবশেষে।কিন্তু খাইলাম না প্রচার করিলাম ও সমর্থন করিলাম।পুরোনো কাসুন্দি জিন্দাবাদ পুটুদার চপ জিন্দাবাদ...
ক্রমে দিকে দিকে বার্তা গ্যালো বহি..
আমাদের ওপর নতুন বয়ামের নতুন কাসুন্দি চাপালে মানছি না মানব না।কিন্তু গোপনে অার্থিক স্বাচ্ছন্দ ও সামাজিক মর্যাদার কারণে ব্যবহারে অগ্রনী ভূমিকা নিলাম।নির্ঘাৎ এ কথা স্বীকার করবেন সেটা ব্যক্তি স্বাধীনতা।আমি আমার ঢোল আগে বাজাবো নাকি পেছনে সেটা আমার ওপরেই থাকি।কিন্তু এখান থেকেই সূচিত হতে শুরু হল একটা সুপরিকল্পিত ক্রাইম।
এই রে তা মোহাই আবার ক্রাইমটাইম জনিত কোনও মেধাবুদ্বুদ লেহন করাতে চান নাকি!! তবে কিন্তু নাই পরিস্কার করে বলে রাখা ভালো।কারণ আগে ঝগড়া পরে নগদ।তা হোক নগদা নগদিই বেটার প্রলাপে না পাত্র দান করলেই ল্যাটা চুকেবুকে যায় এই আর কি.. কিন্তু..
আবার কিন্তু কিসের হে!! হল তো!!
এজ্ঞে না মানে বলছিলুম কি ইয়ে মানে ওই চাপাচাপির ব্যাপারটা বেমালুম চেপে যাবেন কত্তা!! অন্য ভাষা বাংলায় চাপিয়ে দিলে অস্ত্বিত্বে টান লাগে কিনা তাই বলছিলুম ওই কুড়মি আদিবাসী মুণ্ডারি মাহালি কড়া ইত্যাদি স্বতন্ত্র ভাষাগুলোর ওপরও একটু সম পর্যায় জাস্টিফাই করবেন, এটুকুই অধমের আশা।পরোক্ষে বা পক্ষান্তরে বুঝেও না বোঝার ভান করে কিচ্ছুটি হয়নি বলে চাপিয়ে দিলে গুটিকয় মূলনিবাসীরা যে অবনমনের ধুলো চাটবে!!
আগের পর্বটি পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন-
https://lekhajokha-ek-dasaker-goutam-mahato.blogspot.com/2022/06/blog-post.html